• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

রামগঞ্জে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ফসলি জমিতে পুকুর খননের মহোৎসব নীরব প্রশাসন

  • ''
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০২৪

রহমত উল্যাহ পাটোয়ারী, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ভোলাকোট ইউনিয়নের ৫ গ্রাম নিয়ে দেহলা নামের একটি বিলে অবাধে চলছে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের মহোৎসব। ভোলাকোট ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল পটোয়ারী স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে ম্যানেজ করে কৃষকদের তিন ফসলি জমিতে এই পুকুর খনন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কৃষকরা জমি রক্ষায় মানববন্ধন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানান যায়, গত চার বছরে ২শত একরের এ বিলে খনন করা হয়েছে দুই শতাধিক পুকুর। চলতি বছরে খনন করা হয়েছে ৩০টি পুকুর। এ সব পুকুরের মাটি নেওয়া হেেচ্ছ আশপাশের ইটভাটায়। তারা আরো জানান, পুকুর খনন করা এসব জমির বেশির ভাগই ধানের জমি। তারা প্রথমে একটি জমি কিনে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যায়। এতে পাশ্ববর্তি জমি ভেঙ্গে পুকুরে পড়ে। পরে ওই জমির মালিক বাধ্য হয় কম দামে জমি বিক্রি করতে। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি, সেই সাথে যেখানে-সেখানে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করায় ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে ফসল উৎপাদন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) সরেজমিন এ বিলে গিয়ে দেখা যায়, মাটি কাটা কর্মযজ্ঞ। ২০ থেকে ২৫ টলি ও ভেকু দিয়ে চলছে খনন কাজ। এ সময় স্থানীয় রাজা মিয়া, আবদুস সালাম, কালা মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক জানান, আওয়ামীলীগ নেতা দুলাল পাটোয়ারী, সাবেক চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিক স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে ম্যানেজ করে, তাদের লোকজনকে দিয়ে এভাবে এ বিলে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে আমির হোসেন ডিপজল ও জাহাঙ্গীর কোম্পানির ইটভাঁটিতে। তাঁরা মাটিকাটা বন্ধে মানববন্ধন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ ও গণস্বাক্ষর সংবলিত স্বরকলিপি দিয়েছেন। তারপরও বন্ধ হয়নি মাটি কাটা।

সিরাজ মিয়া নামের একজন কৃষক বলেন, সমস্ত মাঠটাকে যেভাবে ধ্বংস করে ফেলছে,আমরা কৃষক কিভাবে চাষাবাদ করর,কি খাব? প্রশাসনে লোকজন আসেন, আবার চলে যান। তাঁরাও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

শাহ আলম নামের আরেকজন কৃষক বলে, মাঠজুড়ে পুকুর। পুকুরের কারনে নিজের জমিতেই যাওয়া যায় না। কিছু কিছু জমির ধান পেকে আছে অথচ কেটে কীভাবে আনব; নৌকা করেও আনা সম্ভব নয়।

ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা,শাহারপাড়া,শাকতলা,ভাদুর ইউনিয়নের সশেষপুর ও সিরুন্দি এ পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক যুগ যুগ ধরে এ কৃষি মাঠে চাষাবাদ করে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কয়েকবছর আগে থেকে এ মাঠটি মাটিখেকো এ চক্রটির কুনজরে পড়ে।

মাটি কাটায় সাথে জড়িত অভিযুক্ত দুলাল পাটোয়ারী বলেন, সবাই কাটে আমরা কাটলে দোষ হয়? আপনারা আসছেন,আপনারা নিউজ করেন। আমরা আমাদের কাজ করি।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, আমি অসহায়,আমার কিছু করার নেই মাটি কাটা বন্ধে। আপনারা নিউজ করে দেখেন কিছু করা যায় কিনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. কারমিন ইসলাম বলেন, সর্বশেষ মাসিক সভায় এ বিষয় আলোচনা হয়েছে।মাটি কাটা রোধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads